আয়রন ডোম (Iron Dome) বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার হট কেক । সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলের আকাশে ছুটে বেড়াচ্ছে আলোক বিন্দু, আর সাইরেনের শব্দ বেজে চলছে সমানে। মাঝে মাঝে আকাশে আলোক বিন্দু গুলো সশব্দে বিস্ফোরণ করে ফেটে যাচ্ছে। এটি ইসরায়েলের আন্টি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম Iron Dome এর কারসাজি । আসুন জেনে নিই আয়রন ডোম (Iron Dome) কি ? এটি কিভাবে কাজ করে । নিচে আয়রন ডোম (Iron Dome) এর ভিডিও ফুটেজ ও দেওয়া রইল।
ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিন এর এলাকা দখল নিয়ে বিবাদ, বহু পুরনো।মাঝে মধ্যেই দুই দেশ একে অপরের ওপর মিসাইল বা রকেট দিয়ে হামলা করে থাকে । 10 ই মে সন্ধ্যা থেকে, ফিলিস্তিনের গাজা প্রদেশ থেকে, হামাস নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠী, ইসরায়েলের বিভিন্ন অংশে রকেট হামলা শুরু করে । 10 এবং 11 ই মে এই রকেট হামলায় 5 জন ইসরায়েলি মারা যায়, কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয় । তবে, বেশির ভাগ রকেট হামলা, ইসরায়েলের ডিফেন্স সিস্টেম আয়রন ডোম (Iron Dome) প্রতিহত করে দিয়েছে। ইসরায়েলের বায়ু সেনার দাবি, আয়রন ডোম (Iron Dome) 90% রকেটকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে ।
আয়রন ডোম (Iron Dome) কি ?
আয়রন ডোম (Iron Dome) একটি বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরী ডিফেন্স সিস্টেম, যা ভূমি থেকে আকাশে মিসাইল নিক্ষেপ করে, নিজের সীমার মধ্যে আসা শত্রুপক্ষের রকেট, বিমান, হেলিকপ্টার বা ড্রোনকে আকাশেই নিমেষে ধংস করতে পারে। এতে থাকা রাডার সারাক্ষণ আকাশ পথে কোন রকেট ধেয়ে আসছে কিনা, তার খোজ রাখে । শত্রুপক্ষের রকেট, সেন্সরে ধরা পড়লেই, লঞ্চার থেকে পাল্টা রকেট বা মিসাইল আপনাথেকেই নিক্ষিপ্ত হয়ে, শত্রুপক্ষের রকেটকে ধংস করে দেয়। 2011 সালে এই ডিফেন্স সিস্টেম বানায় ইসরায়েলের দুটি সংস্থা ‘রাফাল অ্যাডভান্স ডিফেন্স সিস্টেম’ এবং ‘ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিস’। আয়রন ডোম (Iron Dome) এর লঞ্চার সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস সিস্টেমে কাজ করে । ফলে, একে সহজেই ট্রাকের সঙ্গে যুক্ত করে, যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় এবং ট্রাক থেকেই এটি রকেট ছুড়তে পারে ।
আয়রন ডোম (Iron Dome) কিভাবে কাজ করে ?
আয়রন ডোম (Iron Dome)-এর তিনটি অংশ । রাডার , কন্ট্রোল সেন্টার ও লঞ্চার। রকেট লঞ্চারের যে অংশে অনেক রকেট তৈরী থাকে, তাকে বলা হয় ব্যাটারী । একটি ব্যাটারীতে 20 টি বা তার বেশি রকেট যুক্ত থাকে ।
আয়রন ডোম (Iron Dome) এর তিনটি অংশ। রাডার, কন্ট্রোল সেন্টার ও লঞ্চার ।
রাডার, আকাশে 24 ঘন্টা নজর রাখে শত্রুপক্ষের রকেট তাদের আকাশ সীমার মধ্যে প্রবেশ করছে কিনা । শত্রুপক্ষের রকেট রাডারের নজরে এলে, সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল সিস্টেমকে খবর দেয় । কন্ট্রোল সিস্টেম অনুমান লাগায়, শত্রুপক্ষের রকেট জনবহুল এলাকায় পড়বে, না, ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পড়বে । যদি কন্ট্রোল সিস্টেম দেখে, রকেটটি ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পড়বে, তাহলে ওই রকেটকে কোন বাধা দেয় না । যদি দেখে জনবহুল এলাকায় পড়তে পারে, তখন লঞ্চারকে খবর দেয় । লঞ্চার তখন রকেট নিক্ষেপ করে,শত্রুপক্ষের রকেটকে লক্ষ করে । লঞ্চার থেকে নিক্ষেপ করা রকেটে একটি বিশেষ রাডার লাগানো থাকে । যার সাহায্যে, শত্রুপক্ষের রকেটের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা যায় । প্রয়োজনে দিক পরিবর্তন করে, শত্রুর রকেটের কাছাকাছি এসে পড়ে, লঞ্চার থেকে নিক্ষিপ্ত রকেট । এর পর, নিজেই বিস্ফোরণ সহ ফেটে গিয়ে, শত্রুর রকেটকে ধংস করে দেয় ।
এই সিস্টেম, ফাঁকা জায়গায় শত্রুপক্ষের রকেটকে পড়তে, বাধা দেয়না কেন ?
ইসরায়েলের বয়ান অনুযায়ী , শত্রুপক্ষের এক একটি রকেটকে আটকাতে ইসরায়েলের খরচ হয়, ভারতীয় মুদ্রায় 65 লক্ষ টাকার কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞ দের মতে খরচটা প্রায় 1 বা 1.5 কোটি টাকাও হতে পারে । প্রতিবছর গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে প্রায় 4000 রকেট ছোঁড়া হয় । ফলে, টাকা বাঁচানোর জন্য ফাঁকা জায়গায় রকেট গুলিকে পড়ার সুযোগ দেয় ইসরায়েল ।
Pingback: বিশ্ব বাই-সাইকেল দিবস 2021 | World Bicycle day 2021 in Bengali - Benami chithi- বেনামী চিঠি
Pingback: রাজ্যে চালু হতে চলেছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (Student Credit Card): 30শে জুন থেকে শুরু হবে আবেদন প্রক্রিয়া - Benami
Pingback: পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থেকে প্রণতি নায়েক (Pranati Nayek) যাচ্ছে জাপান অলিম্পিকে - Benami chithi - বেনামী চিঠি
Pingback: 'অঙ্কুর কার্যক্রম' (Ankur Karyakram) প্রকল্পে গাছ লাগালে, পুরস্কার দেবে এই রাজ্যের সরকার - Benami chithi - বেনামী চ